হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ:

টেকনাফ সীমান্তে অপরাধ জগতে পা বাড়িয়ে কোটিপতি হয়েছেন এর সঠিক সংখ্যা এখনো অজানা। রাতারাতি কোটিপতি হয়ে অনেকে এখন নিজ হাতে ইচ্ছামত এলাকা শাসন করছেন। যেন তারা এলাকা নামের ছোট্ট একটি দেশের শাসনকর্তা। নিজস্ব বাহিনী তৈরী করে এসব ইয়াবা চোরাকারবারীরা এলাকায় রাম রাজত্ব কায়েম করে বেড়াচ্ছেন। তাদের কোটিপতি হওয়ার পেছনে রয়েছে ইয়াবার কালো থাবা।

টেকনাফের বিভিন্ন এলাকায় কোটিপতির অভাব নেই তা যেমন চির সত্য। তেমনি একই পরিবারের হাফ ডজনের বেশী কোটিপতির সংখ্যা একেবারেই নগণ্য। তবে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের পশ্চিম সিকদারপাড়া এলাকার কালু হাজ¦ীর ৮ ছেলে অল্প দিনের ব্যবধানে কোটি কোটি টাকার মালিক বনেছেন বলে জানা গেছে। এই পরিবারের আনোয়ার হোসন, নুর হোসেন, কামাল হোসেন, জামাল হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, সাইফুল ইসলাম, মোহাম্মদ হাসান, জাহাঙ্গীর আলম এ ৮ ভাই এখন হ্নীলার মাদক স¤্রাজ্যে শীর্ষে। এদের প্রভাবে পশ্চিম সিকদারপাড়াসহ আশে পাশের এলাকার মানুষ রীতিমত অতিষ্ঠ।

জানা গেছে প্রশাসন বিভিন্ন সময় হ্নীলাতে ইয়াবা চোরাকারবারীদের ধরতে অভিযান চালালেও বিশেষ কারণে পশ্চিম সিকদারপাড়ায় তুলনামূলক কম অভিযান পরিচালনা করেন। এই সুযোগে গ্রামটিতে দিন দিন কোটিপতির সংখ্যা বেড়েই চলছে বলে এলাকাবাসী জানান। পুলিশ-বিজিবি বিভিন্ন সময়ে বিচ্ছিন্ন ভাবে পশ্চিম সিকদারপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে কোন না কোন পরিবারের ইয়াবা চোরাকারবারীদের আটক করলেও ইয়াবা পরিবার খ্যাত কালু হাজ¦ীর পরিবারের “ওরা ৮ ভাই” এখনো অধরা। পাহাড় পরিবেষ্টিত সুরম্য দালানে অভিযান চালানো খুবই দুষ্কর।

কক্সবাজার গোয়েন্দা পুলিশ দু’য়েক বার এ আট ভাইয়ের আস্তানা পশ্চিম সিকদারপাড়ার ডিপোতে অভিযান পরিচালনা করেন। ১৫ এপ্রিল ডন আনোয়ারের ডিপোতে ইয়াবা গণণার সময় কক্সবাজার গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মিয়ানমারের এক নারীকে ইয়াবাসহ হাতে নাতে আটক করেন। ১২ এপ্রিল জেলা গোয়ান্দো পুলিশ আনোয়ারের ভাই কামাল হ্নীলা বাস ষ্টেশনের নছীম মার্কেটস্থ টেলিকমের দোকানে ইয়াবা বিক্রির সময় ৪ হাজার পিস ইয়াবা বড়িসহ দুই দোকান কর্মচারীকে হাতে নাতে আটক করেন। গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে ডন আনোয়ার এবং তার সহোদররা পালিয়ে যান। আনোয়ার গং এবং তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা অবৈধ অস্ত্র নিয়ে এলাকায় দিবারাত্রি টহল দেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ-বিজিবি বিভিন্ন সময় অভিযান চালালে আনোয়ার গং পাহাড়ের উপরে উঠে অস্ত্রের মহড়া প্রদর্শন করেন। এ কারণে প্রশাসনের অনেকে ইয়াবা পরিবার খ্যাত কালূ হাজ¦ীর বাড়ীতে অভিযান চালাতে ভয় পান বলে এলাকায় রসাতœক আলোচনা চলে। টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: মাঈন উদ্দিন খাঁন জানান আমরা আসলে কাউকেই ভয় পায় না। পুলিশ ইয়াবা আনোয়ারের বাড়ীতে বেশ কয়েকবার অভিযান চালিয়েছিল। পুলিশ পৃথক দুইটি অভিযান চালিয়ে ইয়াবাসহ পরিবারটির তিন জন সহযোগীকে হাতে নাতে আটক করেছেন। ওরা ৮ ভাইও ছাড় পাবেনা।